অন্বেষা চক্রবর্তী ১ শীতের ভোরের কুয়াশা তখনও পুরোপুরি কাটেনি, তবুও গ্রামমাঠে মানুষের ঢল নেমেছে। চারদিক যেন উৎসবের রঙে ভরে আছে—কেউ খেজুর গাছ থেকে রস নামাচ্ছে, কেউ মাটির হাড়িতে গরম পিঠে সাজাচ্ছে, আর দূরে বাঁশের মাচায় বসে বাউলরা প্রস্তুত হচ্ছে দিনের প্রথম গানের জন্য। রুদ্র পাল, পাতলা গড়নের, গভীর কালো চোখের এক তরুণ, সেই মাচার এক কোণে বসে ধীর হাতে একতারার তার টানটান করছে। লাল মাটির ধুলোয় ভিজে থাকা তার পায়ে কোনো জুতো নেই, কিন্তু চোখে এমন এক দীপ্তি, যেন ভিড়ের প্রতিটি মানুষকে সে গানের মধ্য দিয়ে স্পর্শ করবে। রুদ্রর জন্ম এই গ্রামেই—শৈশবে বাবার কণ্ঠে বাউল গান শুনে বড় হয়েছে, আর…
-
-
সমাপ্তি বর্মন সকালটা ছিল মেঘলা, অথচ বৃষ্টির কোনো আভাস নেই। রুক্মিণীর মাথার ওপর দিয়ে পাখির ছায়া উড়ে গেল—একটা নীল কুড়ুলি, সেইরকম রঙিন পালকের পাখি যেটা কেবল কুশলনগরের আকাশেই দেখা যেত তাদের ছোটবেলায়। বিশ বছর পর এই জায়গাটায় ফিরে আসার সাহস সে নিজের কাছেই একটা বিস্ময় মনে হচ্ছিল। পাশে বসে থাকা ভাই অর্ণব হঠাৎ বলে উঠল, “এই রাস্তার বাঁকে একটা নারকেল গাছ ছিল, মনে আছে?” রুক্মিণী হেসে মাথা নাড়ল। “আর মনে নেই? ওই গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে আমি তোকে গুমরার জুস খাওয়াই বলেছিলাম, আর তো তোর গায়ে গড়িয়ে পড়েছিল!” দুজনেই হেসে উঠল। সেই হাসির মধ্যে ছিল পুরনো দিনের গন্ধ, ছিল শৈশবের ডাকে…