• Bangla - তন্ত্র

    চতুষ্পথের ব্রহ্মদত্ত

    জয়ন্ত পাল ১ কলকাতার আকাশে সেদিন অদ্ভুত এক মেঘ ছিল, যেন কেউ কালির কুয়াশা ছড়িয়ে দিয়েছে শহরের উপর। দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়া মোড়ের চতুষ্পথে বিকেলবেলার ব্যস্ত ট্রাফিক হঠাৎ যেন স্তব্ধ হয়ে গেল, যখন এক ভবঘুরে মানুষ মাঝ রাস্তায় এসে দাঁড়াল। তার গায়ে ছিল মলিন গেরুয়া পোশাক, মাথাভর্তি উসকো চুল, আর গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। কেউ কেউ বলেছিল, সে হয়ত ভবঘুরে কোনও পাগল সাধু; আবার কেউ চোখ কপালে তুলে দেখছিল, তার চোখে যেন আগুনের ঝলকানি। লোকটা দুই হাত তুলে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা জপতে লাগল, ভাষা বোঝা যাচ্ছিল না—কিন্তু আশেপাশে এক অদ্ভুত গুঞ্জন সৃষ্টি হচ্ছিল, যেন শব্দ নয়, ধ্বনি নয়, বরং সময়…

  • Bangla - তন্ত্র

    অমাবস্যার পঞ্চতত্ত্ব

    অভ্র মিত্র অধ্যায় ১: অমাবস্যার আগে শ্যামনগর—পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী এক নিঃস্তব্ধ গ্রাম, যেখানে রাত নামে আগেভাগেই আর কুকুর ডাকে না। চারদিকে যেন অদৃশ্য কিছু চেপে বসে, হাওয়া নিঃশব্দ হয়, আর মাটির ঘরের জানালার কাঁচে প্রতিফলিত হয় না কোনও আলো। অমাবস্যা ঘনিয়ে এলে গ্রামের জীবন থমকে যায়, শিশুদের মুখে হাঁসি থাকে না, আর মায়েরা বাচ্চাদের চোখে কাজল পরে ঘুম পাড়িয়ে দেয়, যেন অজানা কিছু চোখে না পড়ে। শতবর্ষ আগের কথা, এক চণ্ডীপাঠের মঞ্চে নাকি অদ্ভুত এক যজ্ঞ হয়েছিল, যেখান থেকে এক আগুন উঠে পুরো মন্দির গ্রাস করে নেয়। তখন থেকেই চণ্ডীমণ্ডপ ধ্বংসপ্রাপ্ত, আর ওই দিনটিকেই অনেকে গ্রাম ইতিহাসের বিভীষিকা বলে চিহ্নিত করে।…

  • Bangla - ভূতের গল্প

    নিসর্গপুরের নীলকণ্ঠ

    নির্মাল্য সেনগুপ্ত এক পাথুরে পাহাড়, দূরের শাল-পলাশের বন আর উষার কুয়াশায় মোড়ানো পথ ধরে যখন অভিজিৎ আর রোহনের জিপটা ঢুকছিল পুরুলিয়ার নিসর্গপুরে, তখন সকাল গড়িয়ে দুপুর প্রায়। ঝিরঝিরে হাওয়ায় পাতা কাঁপছিল, গাছের ছায়া রাস্তার উপর ভেসে বেড়াচ্ছিল নিরবে। অভিজিৎ জানালা দিয়ে মাথা বের করে ভিডিও করছিল, ক্যামেরার সামনে হাসি ঝলমল করে বলছিল, “ওয়েলকাম টু দ্য আনচার্টেড, বন্ধুরা! আজ আমরা এসেছি পশ্চিমবঙ্গের এক রহস্যময় গ্রামে, যার নাম নিসর্গপুর। এখানে প্রতি পূর্ণিমায় পাহাড় থেকে শোনা যায় রুদ্রতাণ্ডবের ধ্বনি, আর বলে হয়, শত বছর আগে এখানে এক নীলকণ্ঠ সন্ন্যাসী ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন… কেউ তাঁর ধ্যানভঙ্গ করলে আর ফিরতে পারে না। সত্যি? না গুজব? চলুন,…

  • Bangla - তন্ত্র

    কপালকুণ্ডলিনী

    তমোঘ্ন সাহা অধ্যায় ১: চাঁদেরডিহির ছায়া পুরুলিয়ার পাহাড়ি রাস্তায় হেলেদুলে চলছিল জিপটা। চারপাশে যেন নিস্তব্ধতার শ্বাস পড়ে আছে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল। গাছের ডালে বসে থাকা বেজিগুলোও চুপ, যেন কোনও রহস্যের গন্ধ পেয়েছে। অগ্নিবেশ মুখার্জী জানালার ধারে বসে মোটা কাঁচের চশমা ঠেলে সামনে তাকিয়ে আছেন, তাঁর চোখে ক্লান্তি থাকলেও উৎসাহের ঝলক স্পষ্ট। তাঁর হাতে ধরা একটা পুরনো চামড়ার খাতা—চণ্ডীমুখার মন্দির থেকে সংগৃহীত এক তান্ত্রিক পাণ্ডুলিপি, যেখানে কপালকুণ্ডলিনীর গুহার উল্লেখ পাওয়া গেছে। সাথে রয়েছেন তাঁর সহকর্মী ডঃ সরোজিনী রায়, যার চোখে ঝকঝকে বুদ্ধি ও ঠোঁটে লেগে থাকা সংশয়। তাঁদের গাইড জয়ন্তী হাঁসদা বসে আছে সামনের সিটে, একদৃষ্টে পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে। তার চিবুকের…