ঋদ্ধি চক্রবর্তী পর্ব ১: কালির চোখ কলকাতা শহরের মধ্যভাগে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এক পুরোনো পাঠাগার—“রায় রে’ডিং রুম”—তেমন কোনও বিখ্যাত জায়গা নয়। অথচ সেখানে প্রতিদিন দুপুর তিনটার সময় ঠিক এক জন মহিলা এসে বসেন, বাম দিকের দ্বিতীয় সারির তৃতীয় টেবিলে। তাঁর নাম অনামিকা বাগচী। বয়স আটাশ। পেশায় গবেষক, জাদুবিদ্যা ও তন্ত্রশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে তাঁর আসল কাজ শুরু হয় যখন বইয়ের পাতাগুলো শেষ হয়, আর প্রশ্নগুলো মুখে না থেকে ঢুকে পড়ে মগজে। সেদিন দুপুরেও অনামিকা এসে বসেছিল টেবিলটায়। লাল কাপড়ে মোড়া একটা পুরনো খাতা তার সামনে। নাম নেই, লেখকের উল্লেখ নেই। পাতাগুলোতে শুধুই আঁকা—ত্রিকোণ, মন্ডল,…
-
-
তনিমা বসাক পর্ব ১: অজ্ঞাত সংলাপ কলকাতার গ্রীষ্মের বিকেল যখন কাচে ধাক্কা মারে, মনের ভেতরের অতীত-বর্তমানও তখন এক অদ্ভুত তাপমাত্রায় কাঁপে। ড. অরণ্য সেন জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বাইরের ঝিম ধরা রোদ আর ঘামচাপা শহরের ভাঁজে ভাঁজে যতসব অদেখা গল্প জমা হচ্ছে, তার দিকে তাকিয়ে। তাঁর চেম্বারটি শহরের দক্ষিণে, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছাকাছি, চতুর্থ তলায়, চুনে ধরা দেওয়ালের পাশ দিয়ে নেমে যাওয়া বিবর্ণ সিঁড়ির শেষ প্রান্তে এক প্রাইভেট চেম্বার। এইখানেই তিনি মানুষের মন পড়েন—যেমন দারোয়ান পড়ে কাগজে মোড়া চা, কিংবা বইয়ের দোকানের ছেলে পড়ে পৃষ্ঠার ভাঁজ। আজ তাঁর টেবিলের সামনে বসে রয়েছে এক অদ্ভুত মেয়ে—নিপা বসু। চোখে সুরের মতো নরম অস্থিরতা,…
-
দেবাশিস চৌধুরী ১ অভ্র সেন দুই বছর আগেও ভাবতে পারেনি তার বানানো অ্যাপ “ChalBeta” এত সহজে ব্যর্থ হয়ে যাবে। ‘মন খারাপ হলে দাদা বকা দেবে’ এই ধারণা নিয়ে বানানো অ্যাপটি প্লে স্টোর থেকে ব্যান হওয়ার পর সে বুঝেছিল—এই সমাজ মজা করতে জানে না, আর কিছু বেশি সিরিয়াস হলে তারা মামলা করে। একবারে শেষ। এখন সে তার একমাত্র সঙ্গী ল্যাপটপ নিয়ে থাকে সল্টলেকের একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে, যেখানে তার রুমমেট তপন সারাদিন নিউজলিংক, ইউটিউব ভিডিও আর টিকটকের রিল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অভ্রর কাজ মূলত ফ্রিল্যান্স ডিজাইনিং—যা দিয়ে কোনোমতে ভাড়াবাড়ির খরচ ওঠে আর মাসের শেষে নিজেকে বোঝানো যায় যে “চাকরি খারাপ না, ফ্রিডম…