ঐশী মুখার্জি ট্রেনটা আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ছিল পুরুলিয়ার ছোট্ট স্টেশনে। জানালার ফাঁক দিয়ে লালচে ধুলো হাওয়ায় উড়ছিল, যেন মাটির গন্ধে মাখানো কোনো অদৃশ্য ধোঁয়া। রিনি ব্যাগটা আঁকড়ে ধরে বসেছিল জানালার ধারে। কলকাতার চাকরিজীবনের ব্যস্ত, ধাতব আওয়াজে ভরা দিনগুলো থেকে বেরিয়ে সে এসেছিল, ঠিক এক মাসের জন্য। নিজের ইচ্ছেতেই চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছে, বন্ধুদের কাছে এখনো সে সিদ্ধান্তটা অযৌক্তিক, অনেকটা পাগলামির মতো শোনায়। কিন্তু রিনির মনে হচ্ছিল, এই লালমাটি-ঢাকা পথই তাকে নতুন কিছু শিখিয়ে দেবে। স্টেশনটা ছোট, নিস্তব্ধ, বাইরে নামতেই সাইকেলের ঘন্টাধ্বনি আর হকারের ডাক একসাথে কানে বাজলো। রোদটা ঝলমল করছিল, তবুও হাওয়ায় একটা শুষ্ক ঠান্ডা মিশে ছিল। রিনি বুকের ভেতর হঠাৎ…
- 
				
 - 
				
পৃথিবী তার চেনা আলোয় জেগে ছিল সেই ভোরে। কলকাতার আকাশটা কেমন গাঢ় ছায়ায় মোড়া, আর বাসের হর্ণ, চায়ের দোকানের কাশা কাশা আওয়াজ—সবকিছু যেন অরুনিমার শরীরে গেঁথে ছিল সেদিন। ওর চোখে তখন ব্যাগভরা কাগজ, অ্যাস্ট্রো-বায়োলজির রিপোর্ট, এক জোড়া ঘুমহীন চোখ, আর একটা রুমাল—যেটা ঈরা বানিয়ে দিয়েছিল ফেলে যাওয়ার আগের রাতে। অরুনিমা জানত, এই যাত্রা তার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রাপ্তি—চাঁদের বুকে ভারতীয় বিজ্ঞানী হিসেবে অবতরণ করা শুধু তার নয়, গোটা দেশের গর্ব। তবুও একটা ভার যেন বুকের বাঁ পাশে দলা পাকিয়ে ছিল, ঠিক যেমন বোঝা জমে মেঘলা আকাশে। ট্যাক্সি যখন বাড়ি থেকে বেরোলো, ঈরা তখন তার গাল চেপে ধরে বলেছিল, “তুমি কি আকাশে…
 - 
				
মালবিকা সেনগুপ্ত ঢাকার ধুলো-ধোঁয়া আর ট্র্যাফিকের চক্রব্যূহ পেরিয়ে যখন জয়িতা নামল মেঘনাঘাটের ছোট্ট ফেরিঘাটে, তখন সূর্য মাথার উপর একচিলতে আগুন হয়ে দাঁড়িয়ে। চারপাশে জনমানবশূন্য প্রান্তর, দুটো হেমন্তের কাক আর কয়েকটা শুকনো পাতার ঝটপট আওয়াজ ছাড়া অন্য কোনও শব্দ নেই। ঠিক এইখানেই সে শুট করবে তার নতুন ট্র্যাভেল ভ্লগ: “Unfiltered Bengal”-এর এক বিশেষ পর্ব। “মোবাইল ডেটা কাজ করছে না? নো টাওয়ার?” – ক্যামেরাম্যান শান্তু মাথা চুলকে বলল। জয়িতা মাথা নাড়ল। ও জানত এই চর অঞ্চলে ঢুকলেই নেটওয়ার্ক ঘুমিয়ে যায়, মানুষের শব্দের চেয়ে নদীর শব্দ বেশি জোরালো হয়। “চর বলরামপুর”, গুগল ম্যাপে মাত্র একটা বিন্দু। কিন্তু সেই বিন্দুর মধ্যে যেন সারা…