অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় কলেজ স্ট্রিটের ভিড়ভাট্টা সবসময় একইরকম থাকে। পুরোনো বইয়ের গন্ধ, চায়ের ভাঁড় হাতে ছাত্রদের ঝাঁক, ফুটপাতের দোকানগুলোয় বইয়ের পাহাড়—সব মিলিয়ে শহরের একটুকরো জাদুর মতো লাগে। অর্ণব সেই ভিড়ের মধ্যে দিয়ে ধীরপায়ে হাঁটছিল। বই কেনা তার আসল উদ্দেশ্য ছিল না, বরং মনে মনে একটা অজানা টান তাকে এখানে টেনে এনেছিল। অফিস থেকে বেরিয়ে অন্য কোনোদিন সে সোজা বাড়ি ফিরলেও আজকে কেন যেন এই রাস্তার টানে চলে এসেছে। দোকানদাররা গলা উঁচিয়ে ডাকছিল—“সেকেন্ড হ্যান্ড, সস্তার দামে, বিরল সংস্করণ!” অর্ণব এক-দুটি দোকানে থামল, বইগুলো উল্টেপাল্টে দেখল। তার চোখে হঠাৎ পড়ল এক পুরোনো ধূলো ধরা বই—চামড়ার মলাট ছেঁড়া, কাগজগুলো হলুদ হয়ে গেছে, তবু…
-
-
সমাপ্তি বর্মন সকালটা ছিল মেঘলা, অথচ বৃষ্টির কোনো আভাস নেই। রুক্মিণীর মাথার ওপর দিয়ে পাখির ছায়া উড়ে গেল—একটা নীল কুড়ুলি, সেইরকম রঙিন পালকের পাখি যেটা কেবল কুশলনগরের আকাশেই দেখা যেত তাদের ছোটবেলায়। বিশ বছর পর এই জায়গাটায় ফিরে আসার সাহস সে নিজের কাছেই একটা বিস্ময় মনে হচ্ছিল। পাশে বসে থাকা ভাই অর্ণব হঠাৎ বলে উঠল, “এই রাস্তার বাঁকে একটা নারকেল গাছ ছিল, মনে আছে?” রুক্মিণী হেসে মাথা নাড়ল। “আর মনে নেই? ওই গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে আমি তোকে গুমরার জুস খাওয়াই বলেছিলাম, আর তো তোর গায়ে গড়িয়ে পড়েছিল!” দুজনেই হেসে উঠল। সেই হাসির মধ্যে ছিল পুরনো দিনের গন্ধ, ছিল শৈশবের ডাকে…