অরুণিমা বসু শিলিগুড়ির শহুরে আলোর ঠিক সীমারেখা পেরিয়ে, যেখানে পিচঢালা রাস্তা কাঁকরবিছানো পথের সঙ্গে হাত বদল করে, সেখানেই শুরু হয় জলদাপাড়ার রেঞ্জ—প্রায় ছয় হাজার হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত এক জীবন্ত নিঃশব্দতা। অরিন্দম সরকার এখানে নতুন পোস্টিং পেয়েছে তিন মাস হল। ছোটবেলা থেকেই তার প্রকৃতির প্রতি অনুরাগ, কিন্তু সেটা কখনো উচ্চস্বরে বলা হয়নি। শান্ত, অল্পভাষী, সাদামাটা এই মানুষটা সদ্য কলকাতা থেকে বদলি হয়ে এসে একেবারে জঙ্গলের মাঝখানে এসে বসবাস শুরু করেছে—যেখানে সন্ধে নেমে এলে মানুষের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়, আর কেবল গাছেদের ফিসফাস শোনা যায় হাওয়ার সঙ্গে। অরিন্দমের দিন শুরু হয় সূর্য ওঠার আগে। নিজের কঞ্চির তৈরি চায়ের কাপ হাতে করে সে বনপথ…
-
-
দীপায়ন গুহ ১ সুন্দরবনের ঘন সবুজের বুক চিরে চলে যাওয়া সরু জলপথে সকালবেলায় ধোঁয়াশা ছেয়ে ছিল। কেওড়া, গরান আর সুন্দরী গাছের পাতাগুলোর ফাঁকে ফাঁকে আলো ফোটার চেষ্টা করলেও ঘন কুয়াশার কুন্ডলীতে হারিয়ে যাচ্ছিল সমস্ত দৃশ্য। বন বিভাগের টহল নৌকোটি ঘোলা জলে এগিয়ে চলছিলো—চালকের মুখে গভীর উদ্বেগ। সামনে বসে থাকা বিট অফিসার রবিউল শেখ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল জলের পাশে সদ্য দেখা দেওয়া কয়েকটি বাঘের পায়ের ছাপের দিকে। এই চতুর্থ বার, গত এক মাসে, এই অঞ্চলেই মৃতদেহ মিলেছে বন দফতরের আধিকারিকের, আর এই বার… সেই মৃতদেহটি ছিল তাঁরই বহু বছরের পরিচিত, ডিএফও প্রফুল্ল ঘোষ। গাছে গাছে কাকের চিৎকার, হঠাৎ…