ঋতম ঘোষ এক নতুন অফিসে প্রথম দিনটা যেন এক অচেনা জগতে প্রবেশ করার মতো ছিল। ভোরবেলা থেকেই অদ্ভুত এক উত্তেজনা আর ভয় কাজ করছিল মনে। বাসা থেকে বেরোনোর সময় মায়ের কণ্ঠে আশীর্বাদ শোনার পরও মনে হচ্ছিল, কিছু একটা বদলাতে চলেছে জীবনের ছন্দে। লিফট থেকে নেমে যখন বিশাল কাচের দরজার সামনে দাঁড়ালাম, তখন দেখলাম ভেতরে ব্যস্ততার সমুদ্র বইছে। প্রত্যেকেই নিজের কাজে নিমগ্ন, কম্পিউটারের কিবোর্ডে আঙুলের শব্দ, ফোন কলের তাড়া, আর মাঝে মাঝে সহকর্মীদের হালকা কথাবার্তা—সব মিলিয়ে এক আলাদা পরিবেশ। পরিচয় পর্ব শেষ হতেই ডেস্ক দেখিয়ে দেওয়া হলো, আর তখনই তার সঙ্গে প্রথম দেখা। খুব সাধারণ চেহারা, তবে চোখের দৃষ্টি ভিন্নরকম—শান্ত, গভীর,…
-
-
তৃষ্ণা মুখার্জী অরুনাভ ঘোষ অফিসে প্রবেশ করল সকাল সাড়ে ন’টার কিছু আগে, হাতে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে। দক্ষিণের জানালাগুলো দিয়ে সকালের সূর্য ঠিক তখনই ঢুকছিল, আর তার চোখে সানগ্লাস চাপিয়ে সে যেন আরও বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল সেই আলোয়। পুরো ফ্লোর জুড়ে একটা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ল—“অরু এসেছে।” কেউ হয়তো তার ঠাট্টায় সঙ্গী হবে, কেউ হেসে উল্টো পথে হাঁটবে, কেউ আবার অপেক্ষা করত দিনের প্রথম উৎসাহের উৎসটা কখন তাকিয়ে বলবে, “তোর শার্টটা তো আজ খুবই কালারফুল, কী ব্যাপার?” অফিসের রিসেপশন থেকে ক্যান্টিন, সেলস টিম থেকে ফিনান্স—সবাই কোনো না কোনোভাবে চিনত অরুনাভকে, কেউ ‘আলো’র মতো, কেউ ‘আলোচ্য’। তবে একটা ডেস্কে সবসময়…
-
সুমনা বসাক (এক) নয়না সাহা প্রথম দিন অফিসে ঢুকেই একটু থমকে গিয়েছিল। ছিমছাম ফ্লোর, ছায়াঘেরা আলো, আর প্রফেশনাল পোশাকের নিচে অসংখ্য অভিব্যক্তি চাপা দিয়ে রাখা মুখগুলো যেন তার দিকে তাকিয়ে ছিল না—তবু এক অদৃশ্য মানদণ্ডে তাকে মেপে নিচ্ছিল। লাল পাথরের আধুনিক বিল্ডিংয়ের পঞ্চম তলায় “সিগমা ইনফোটেক”-এর কনটেন্ট বিভাগে সে সদ্য জয়েন করেছে একজন জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে, কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স করে সদ্য পাশ করা একটা মেয়ে, যার চোখে কিছুটা দৃষ্টির সংকোচ, কিছুটা আবেগ আর কিছুটা “আমি পারব তো?” ধরনের সংশয়। টিমের এক সিনিয়র—তিথি ঘোষ—তার ডেস্ক অবধি পৌঁছে দিয়ে হালকা করে বলল, “এই অফিসে বেশি কথা না বলাই ভালো। কাজ…