অঙ্কিতা প্রধান কলেজের ব্যস্ত ক্যাম্পাসে ভোরের প্রথম ক্লাস শুরু হওয়ার আগে ছাত্রছাত্রীদের ভিড়ের মধ্যে এক অদ্ভুত দৃশ্য চোখে পড়ে ঐশীর। সে তখনই লক্ষ্য করে, প্রতিদিন যেন এক নিয়মিত ছায়া, একটি অচেনা মেয়ে লাল চুড়ি পরে ভিড়ের মধ্যে হেঁটে বেড়ায়। প্রথম দিনটি কেবল নজরকাড়া এক ঘটনা মনে হয়েছিল—কোনো ক্লাসের ছাত্রী কিংবা পরিচিত মুখের মতো নয়, তবু যেন তার উপস্থিতি পুরো ক্যাম্পাসকে আলাদা রঙে ভাসিয়ে দেয়। ঐশী প্রথমে ভেবে নেয় এটি হয়তো কারো ব্যক্তিগত স্টাইল, অথবা শুধু কৌতূহল। কিন্তু পরের দিন, ঠিক একই সময়, একই লাল চুড়ি, একই ধীরে ধীরে ভিড়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া—এটি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। ঐশীর মনে কৌতূহল…
-
-
এক মাঘ মাসের শেষে মুর্শিদাবাদ শহরের ভেজা শীত এখনও হাড়ে হাড়ে কাঁপায়। গঙ্গার পাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা রাজবাড়ির ছায়ায়, ড. সায়ন্তনী মুখোপাধ্যায় একটি পুরাতন প্রত্নতাত্ত্বিক ফাইল হাতে নিয়ে চুপ করে বসেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি অনুদানের ভিত্তিতে তিনি এসেছেন মুর্শিদাবাদের হারিয়ে যাওয়া ফোক-কালচার আর মুঘল-পরবর্তী ইসলামি নির্মাণকলা নিয়ে গবেষণার জন্য। কিন্তু আসল আগ্রহ তাঁর ছিল এক রহস্যময় বস্তু নিয়ে—যার নাম কেবলমাত্র একটি ডকুমেন্টে পাওয়া গিয়েছিল: “শ্বেতপাথরের বালিশ।” নথিতে লেখা ছিল, এটি এক সময় একটি প্রাচীন মসজিদের গোপন কামরায় রাখা হত এবং বলা হত যেই এই বালিশে একবার মাথা রাখে, সে মৃতদের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে—তাদের যন্ত্রণার স্মৃতি, তাঁদের না-বলা ইতিহাস যেন…
-
ইন্দ্রনীল লাহা ১ কলকাতার জানুয়ারি শীতভরা সকালে এসপ্ল্যানেড বাসস্ট্যান্ডটা যেন একটু বেশিই কোলাহলময় লাগছিল। চারপাশে ঠান্ডা কুয়াশা, পুণ্যার্থীদের গমগম আওয়াজ, ঠাকুরের প্রসাদের গন্ধ, আর চায়ের দোকানে জমে ওঠা ভিড়—সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত উৎসবের আমেজ। অনির্বাণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল বাকিদের সঙ্গে, গলায় ম্যারুন রঙের একটা মাফলার পেঁচানো, চোখে একটা নিরুত্তাপ ছায়া। তার পাশে ঈশান ফোনে ব্যস্ত—বাসের টাইমিং, হোটেলের কনফার্মেশন মেল, সব কিছু একে একে দেখে নিচ্ছে। তৃণা বসে ছিল ওদের ব্যাগের পাহাড়ের পাশে, ঠান্ডায় হাত ঘষছে, আর বিক্রম তার নতুন DSLR ক্যামেরা নিয়ে একের পর এক ক্লিক করে চলেছে—কখনও ফুটপাথের বাউল, কখনও বাসের ছাদের ওপরে বাঁধা বস্তা। “এই মেলা কিন্তু মিথ্যা…