সৌরভ ভৌমিক দোতলা বাংলোটির রং ছিল ছাই ধূসর, যেন রোদে পোড়া কোনও পুরোনো অ্যালবাম থেকে উঠে এসেছে। জানালার কাচগুলো ঘোলাটে, কাঠের পাল্লায় পোকায় ধরা ক্ষতচিহ্ন। হেমন্তের পড়ন্ত বিকেলে গাড়ির শব্দ থেমে গেলে মৃদু হাওয়া বইছিল পুরনো বাগানের ঘাসের গায়ে। গাড়ির দরজা খুলে নামলেন সায়ন আর রীতা। নবদম্পতি, শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে খানিক দূরে এক নিঃসঙ্গ বাংলোয় নতুন শুরু করতে এসেছেন। “এমন একটা জায়গা তুমি ঠিক করো কীভাবে?”—রীতার গলায় মৃদু অসন্তোষ। সায়নের হাসিটা ধীর, ঠোঁটের কোণে অদ্ভুত প্রশান্তি—”শান্তি চেয়েছিলে, না? এখানে ট্রাফিক নেই, শব্দ নেই, কিচ্ছু নেই।” রীতা মুখ ফেরালেও বাড়ির দিকে চাইল—তাদের নতুন বাসা। ব্রোকার বলেছিল, বাড়িটা আগে এক ইংরেজ…
-
-
অভিজিৎ দাস পর্ব ১: আগমনী কলকাতার বিখ্যাত নাট্যদল ‘অভিনয়নগর’ তাদের পঁচিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে শহরের বাইরে একটা থিয়েটার রিট্রিটের আয়োজন করেছিল। স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বিষ্ণুপুর—ইতিহাস আর সঙ্গীতের শহর। সেখানে গিয়ে নাটকের মহড়া, স্ক্রিপ্ট রিডিং, ওয়ার্কশপ, আর প্রকৃতির মধ্যে কিছুটা সময় কাটানো—এই ছিল উদ্দেশ্য। দলের অন্যতম প্রবীণ সদস্য অভিজিৎদা বলেছিলেন, “বিষ্ণুপুরে একটা পুরনো রাজবাড়ির মন্দির আছে। বহুদিন কেউ যায় না, একটু ভৌতিক, কিন্তু জায়গাটা একেবারে থিয়েটার-যোগ্য।” সবার কৌতূহল জাগল। নাটকের ছায়া পড়ার জন্য এমন পরিবেশই তো চাই। রওনা হয়েছিল দশজন—আটজন অভিনেত্রী, একজন মেকআপ আর্টিস্ট, আর রুদ্র—স্ক্রিপ্ট লেখক এবং নির্দেশক। দলটির গঠন ছিল যেন এক থ্রিলারের চাবিকাঠি। সকলেই নিজস্ব জীবনযন্ত্রণা…
-
দেবাশিস চৌধুরী ১ অভ্র সেন দুই বছর আগেও ভাবতে পারেনি তার বানানো অ্যাপ “ChalBeta” এত সহজে ব্যর্থ হয়ে যাবে। ‘মন খারাপ হলে দাদা বকা দেবে’ এই ধারণা নিয়ে বানানো অ্যাপটি প্লে স্টোর থেকে ব্যান হওয়ার পর সে বুঝেছিল—এই সমাজ মজা করতে জানে না, আর কিছু বেশি সিরিয়াস হলে তারা মামলা করে। একবারে শেষ। এখন সে তার একমাত্র সঙ্গী ল্যাপটপ নিয়ে থাকে সল্টলেকের একটা ছোট্ট ফ্ল্যাটে, যেখানে তার রুমমেট তপন সারাদিন নিউজলিংক, ইউটিউব ভিডিও আর টিকটকের রিল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। অভ্রর কাজ মূলত ফ্রিল্যান্স ডিজাইনিং—যা দিয়ে কোনোমতে ভাড়াবাড়ির খরচ ওঠে আর মাসের শেষে নিজেকে বোঝানো যায় যে “চাকরি খারাপ না, ফ্রিডম…