শ্রীজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ট্রেন ছাড়ার হুইসেল যখন শিয়ালদহ স্টেশনের কোলাহল কেটে রাতের নিস্তব্ধতাকে চিরে দিল, তখন আমি জানলার পাশে বসে সামনের সাত দিনের চিন্তায় ডুবে ছিলাম। ব্যাগে জুতসই জামাকাপড়, হাতে একটা নোটবুক, মাথায় শুধু একটাই ইচ্ছা—নিজেকে একটু খুঁজে পাওয়া। নামটা আগেই ঠিক ছিল—কালিম্পং। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিক ঘুরে ফেলেছি অনেকবার, কিন্তু এই পাহাড়ি শহরটা আমার কাছে ছিল এক রহস্য। ট্রেন ছুটছে—কাঁচের বাইরে শহরের আলো এক এক করে ফিকে হয়ে আসছে। পাশে বসা সত্তরোর্ধ্ব ভদ্রলোক হঠাৎ কথা বলে উঠলেন, “উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন?” আমি হেসে বললাম, “হ্যাঁ, কালিম্পং।” তিনি চোখ মুছলেন, “কালিম্পং মানে আমার শৈশব। আপনার ভালো লাগবে, খুব ভালো।” রাত বাড়ছে, ট্রেন এগোচ্ছে শিলিগুড়ির…
-
-
রাতুল কোনার ধুলেশ্বরীর সকাল ধুলেশ্বরী গ্রামের সকালটা এককালে ছিল পাখির ডাক, লোনা হাওয়ার সুবাস, আর নারকেল পাতার ফিসফিসে কথার মধুর মিলনমেলা। এখন? এখন শুধু নোনাজলের ঝাঁঝ, ভাঙা কুঁড়েঘরের পাশে ছড়িয়ে থাকা বস্তার টুকরো, আর হঠাৎ হঠাৎ কাঁদা জমির বুকে ফুটে ওঠা লালচে ফাটল—যেন মাটির নিজস্ব হাহাকার। জহর শেখ, পঁইত্রিশ বছরের জেলে, গামছা দিয়ে কাঁধ মুছতে মুছতে নৌকা ঘাটে পৌঁছল। চোখে-মুখে গভীর ক্লান্তি, আর একটা অপরাধবোধ—কাল রাতে সে ঘুমোতে পারেনি। সমুদ্রের ঢেউয়ের আওয়াজ, আর মাথার মধ্যে জমে থাকা দুশ্চিন্তার ঝড়—এই দুটোই তাকে ঘুমোতে দেয়নি। তার ছেলে রায়হান, ক্লাস সেভেনে পড়ে, গতকাল বলছিল, “আব্বা, স্কুলে মাস্টার মশাই বলেছে, এইভাবে সমুদ্র বাড়তে থাকলে…