ইন্দ্রনীল দত্ত
১
রাহুল, মিতু ও নিশা—তিনজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু—সদা নতুন অভিজ্ঞতা আর অদ্ভুত চ্যালেঞ্জের সন্ধানে থাকে। শহরের ব্যস্ত জীবন, স্কুল ও কলেজের চাপ, ঘরের নিয়মিত রুটিন—সবকিছু থেকে তারা যেন একটু মুক্তির খোঁজে। একদিন সকালে, ফোনে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট ঘেঁটে তারা দেখল নতুন একটি ট্রেন্ড ভাইরাল হচ্ছে: “মজার সেলফি” চ্যালেঞ্জ। ট্রেন্ডটি সেলফি তোলার এক ধরনের খেলা, যেখানে প্রতিদিনের জীবনের অদ্ভুত বা হাস্যকর মুহূর্তকে ক্যামেরার মাধ্যমে ধরা হয় এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়। রাহুল, যিনি সৃজনশীল আর একটু মজাদার প্রকৃতির, তাড়াতাড়ি বলল, “এই ট্রেন্ডে আমরা শুরু করি, চল দেখি আমরা কতটা মজার মুহূর্ত তৈরি করতে পারি!” মিতু, যে সবসময় ফ্যাশন ও ছবি নিয়ে আবেগপ্রবণ, তাৎক্ষণিকভাবে রাজি হয় এবং নিশাও, যে সবসময় বন্ধুরা সাথে থাকলে আনন্দ খুঁজে পায়, সম্মতি জানায়। তারা ঠিক করে, প্রতিদিন নতুন নতুন সেলফি তোলা হবে, যার মধ্যে থাকবে হাস্যকর, অদ্ভুত বা রোমাঞ্চকর মুহূর্ত, এবং সেই মুহূর্তগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হবে। প্রথম দিনেই তারা সেলফি তোলার জন্য এমন একটি জায়গা খুঁজে নেয় যা সাধারণ মানুষের জন্য একটু অদ্ভুত মনে হতে পারে—লিফট।
লিফটে পৌঁছে তারা তিনজন একসাথে ছবির জন্য প্রস্তুতি নেয়। রাহুল লিফটের কাচের দরজা সামলাচ্ছে, মিতু লাইটিং এর দিকে খেয়াল রাখছে এবং নিশা তার মোবাইল দিয়ে সেলফি তোলার চেষ্টা করছে। শুরুতে একটু ভয় পাচ্ছিল তারা, কারণ লিফট ছোট আর মানুষ আসতে পারে, কিন্তু সেই ভয় যেন তাদের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দেয়। তারা ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গভঙ্গি, হাসি, চেয়ার পজ, এমনকি লিফটের বোতামে দাঁড়িয়ে সামান্য মজার কায়দা করে ছবি তোলার চেষ্টা করে। প্রথম কয়েক মিনিটে অনেক ছবিই ব্যর্থ হয়, কারণ কেউ কেউ ঠিকভাবে ক্যামেরায় ফোকাস করতে পারছে না, কেউ কেউ হঠাৎ লাফ দিয়ে হাসির অঙ্গভঙ্গি দেখাচ্ছে। কিন্তু এই ভয় আর অস্থিরতা তাদের জন্য আরও উত্তেজনা তৈরি করছে। একসময় তারা এমন একটি ছবি তোলে যেখানে রাহুল লিফটের দরজায় হেলান দিয়ে হাসছে, মিতু হালকা অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে এবং নিশার ক্যামেরায় সবকিছু ক্যাপচার হচ্ছে। ছবিটি একেবারে অদ্ভুত, হাস্যকর এবং একই সময়ে প্রাণবন্ত। তারা হেসে হেসে ছবি দেখে আরও উৎসাহিত হয় এবং ঠিক তখনই তারা তা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে।
পরদিন সকালে তারা দেখল, তাদের ছবিটি ভয়াবহভাবে ভাইরাল হয়ে গেছে। লাইক, কমেন্ট, শেয়ার—সবই আকাশ ছুঁছে। মানুষ তাদের ছবির অদ্ভুততা এবং বন্ধুত্বের মজা দেখে মুগ্ধ হচ্ছে। এই প্রতিক্রিয়ার মধ্যে তারা নতুন শক্তি অনুভব করে। তারা বুঝতে পারে, ছোট ছোট হাস্যকর মুহূর্তও মানুষের জীবনে আনন্দ যোগ করতে পারে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এটি অজস্র মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। রাহুল, মিতু এবং নিশা একে অপরের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে, “চলো, আজ থেকে প্রতিদিন নতুন কিছু করি!” তাদের মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনা জাগে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে রঙিন করে তোলে। তারা আরও অদ্ভুত, সাহসী এবং মজার সেলফি তোলার পরিকল্পনা করতে থাকে। লিফটের সেই অদ্ভুত মুহূর্ত কেবল তাদের বন্ধুত্বকে আরও শক্ত করে না, বরং একটি নতুন সেলফি ক্রেজের সূচনা করে, যা পরবর্তী দিনগুলোতে আরও বড় হয়ে উঠবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ভাইরাল হওয়া প্রথম সেলফি যেন একটি সেতু হয়ে দাঁড়ায়, যা তাদের জীবনকে নতুন রঙ ও রোমাঞ্চের দিকে ঠেলে দেয়।
২
রাহুল, মিতু এবং নিশা আগের দিনের ভাইরাল সেলফি থেকে নতুন উদ্দীপনা নিয়ে লিফটে ফিরে আসে। তাদের মনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ জেগেছে: লিফটের ভিতরে একসাথে ঝাঁপ দিয়ে মজার পোজ নেওয়া। তারা ঠিক করে, এবার শুধু হাস্যকর ছবি নয়, বরং কিছু রোমাঞ্চকর মুহূর্তও ক্যামেরায় ধরা হবে। লিফটের ছোট ঘরে তারা দাঁড়ায়, হাসি আর উত্তেজনা নিয়ে চোখে চোখ রাখে। রাহুল প্রথমে পেছনে ঝুঁকে লাফ দেয়, মিতু সামনের দিকে ঝাঁপ দেয় এবং নিশা তাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ধরে ছবি তুলতে থাকে। লিফটের দেয়াল, কাচের দরজা এবং বোতামগুলো যেন তাদের মজার কায়দার প্রেক্ষাপট হয়ে ওঠে। প্রত্যেক লাফ, প্রত্যেক ভঙ্গি ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি হয়, এবং প্রতিটি ছবিই আরও হাস্যকর ও অদ্ভুত হয়ে ওঠে। তারা হেসে হেসে লাফ দেয়, কখনও মোবাইল ক্যামেরার দিকে অঙ্গভঙ্গি করে, কখনও আবার একে অপরকে ঠাট্টা করে। তাদের উত্তেজনা আর আনন্দ যেন লিফটের ঘরে আকাশে উঠেছে, এবং ছোট ছোট শব্দ, চিড়িয়াখানার মতো চিৎকার, তাদের মজার মুহূর্তগুলো আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
কিন্তু হঠাৎ একটি চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে। লিফটের হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া শব্দ আর থামার মুহূর্তে তারা তিনজনেই চমকে যায়। লিফট হালকা কাঁপতে থাকে, বোতামের লাইট ফ্লিকার করতে থাকে, আর রাহুল, মিতু ও নিশা বুঝতে পারে তারা হঠাৎ লিফটের ভিতরে ফেঁসে গেছে। প্রথমে তারা একটু ভয়ে স্থির থাকে, কারণ এমন পরিস্থিতি আগে কখনও তাদের হয়নি। কিন্তু সেই ভয় যেন তাদের বন্ধুত্বের মজা আর ক্যামেরার উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে। তারা হালকা চিৎকার করে, হেসে-খেলতে থাকে এবং হঠাৎ ভাবতে থাকে, “যদি এই মুহূর্তও ক্যামেরায় ধরা যায়?” নিশা দ্রুত মোবাইল চালায় এবং লিফটের ফাঁকা দেয়াল, বোতাম, এবং তাদের লাফের সব রোমাঞ্চকল্প ছবি ও ভিডিওর মাধ্যমে ধরে রাখে। প্রথমে তারা একটু ভয় পাচ্ছে, কিন্তু তখন তারা বুঝতে পারে, এই অপ্রত্যাশিত ফেঁসে যাওয়া মুহূর্তও যেন নতুন সেলফি ট্রেন্ড তৈরি করতে পারে।
পরের দিন যখন তারা তাদের ভিডিও এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে, তা অদ্ভুতভাবে ভাইরাল হয়ে যায়। মানুষ তাদের কাণ্ডকারখানা, সাহস এবং হাস্যকর চেষ্টাকে দেখে মুগ্ধ হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, লিফটের ভিতরে তিনজন বন্ধুর অদ্ভুত ভঙ্গি, হেসে-খেলতে থাকা মুখ, হঠাৎ লিফট থেমে যাওয়ার চমক এবং তারপর ক্যামেরায় ধরা প্রতিটি মুহূর্ত—সবকিছুই এমনভাবে ধরা হয়েছে যে দর্শকরা চোখ কেঁপে যায় হাসি থেকে। কমেন্টে মানুষ লিখছে, “এরা কি সত্যিই লিফটে আটকা পড়েছে, নাকি অভিনয় করছে?” “সবচেয়ে মজার ভাইরাল ভিডিও!”–এরকম কমেন্ট পড়ে তারা আরও আনন্দিত হয়। এই ভাইরাল হওয়া মুহূর্ত তাদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা জাগায়। তারা বুঝতে পারে, প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ, নতুন রোমাঞ্চ, এবং অপ্রত্যাশিত মুহূর্তই সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে জনপ্রিয়তা আনতে পারে। লিফটের সেই ছোট্ট, অদ্ভুত কক্ষে ফেঁসে যাওয়া মুহূর্তটি কেবল তাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে না, বরং তাদের সেলফি ক্রেজকে আরও উচ্চতায় পৌঁছে দেয়, এবং তারা নতুন নতুন জায়গা ও পরিস্থিতিতে আরও সাহসী হয়ে ছবির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
৩
রাহুল, মিতু ও নিশা আগের ভাইরাল সেলফি ও ভিডিওর উত্তেজনায় পরের দিনের নতুন চ্যালেঞ্জের পরিকল্পনা করে। তারা ঠিক করে এবার শহরের এক ব্যস্ত বাজারে যাবে এবং সেখানে একটি “অদ্ভুত কিন্তু মজার” সেলফি তুলবে। বাজারের রঙিন ধাপ, মানুষের হট্টগোল, দোকানের নানা সাজ-সজ্জা—সবই তাদের সেলফির জন্য এক প্রাকৃতিক ব্যাকগ্রাউন্ড। তারা লাল পট্টি, সবুজ সবজি, ঝাঁঝালো ফল, ও দোকানের ঝোল ঝোলানো আলোর মাঝে তাদের ক্যামেরা ধরে রাখে। রাহুল সামনের দিকে দাঁড়ায়, মিতু পাশে পোজ নেয় এবং নিশা মাঝখানে ক্যামেরা ধরে চেষ্টা করে নিখুঁত ছবি তোলার। কিন্তু হঠাৎ তারা লক্ষ্য করে, একটি কালো কাক তাদের দিকে টপকাচ্ছে। প্রথমে তারা চিন্তা করে না, কারণ পাখিটি বাজারের সাধারণ দৃশ্যের সঙ্গে মিশে গেছে। কিন্তু কাকটি হঠাৎ তাদের কাছের ফলের ঝুড়িতে লাফ দেয়, এবং বাজারের কোলাহলের মধ্যে এই ছোট্ট প্রাণীটি তাদের সেলফির ফ্রেমে ঢুকে যায়।
রাহুল, মিতু এবং নিশা কাকের আচরণকে হাস্যকরভাবে গ্রহণ করে। তারা চেষ্টা করে কাককে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি দেখাতে প্রলুব্ধ করতে, যেন পাখি আরও অদ্ভুত ভঙ্গি করে ছবি বা ভিডিওতে ধরা পড়ে। রাহুল তার মোবাইল কাঁধে ধরে, মিতু কাকের দিকে হাত নাড়ে এবং নিশা হঠাৎ হেসে ক্যামেরা ফোকাস ঠিক রাখে। কিন্তু এক মুহূর্তে, কাকটি হঠাৎ তাদের পেছনের ফলের ঝুড়িতে লাফ দেয় এবং তার ছিটেফোঁটা রাহুলের কাঁধে পড়ে। মুহূর্তেই সেলফি নষ্ট হয়ে যায়, মোবাইলের স্ক্রিনে ধূসর ও অদ্ভুত ছিটেফোঁটার ছাপ পড়ে। বন্ধুরা প্রথমে হকচকিয়ে যায়, কিন্তু তারপর তারা হেসে ফেটে পড়ে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা তাদের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দেয়, কারণ তারা বুঝতে পারে যে, কখনও কখনও প্রকৃতির অপ্রত্যাশিত আচরণও মজার মুহূর্ত তৈরি করতে পারে। তারা দ্রুত ভিডিওটি চালিয়ে ধরে কাকের ছোট ছোট লাফ, পাখির অদ্ভুত ভঙ্গি এবং তাদের নিজেদের রিঅ্যাকশন ক্যামেরায়।
পরের দিন তারা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। ভক্তরা কাকের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই, ছিটেফোঁটার অদ্ভুত মুহূর্ত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ হাসিকে দেখে আরও আনন্দিত হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনজন বন্ধুর অদ্ভুত ভঙ্গি, হঠাৎ ছিটেফোঁটা পড়ার সময় তাদের অবাক হওয়া মুখ এবং তারপর হেসে ফেটে পড়ার মুহূর্ত—সবই দর্শকদের হাসি বাধে। কমেন্টে লেখা থাকে, “এই কাকই বা সেলফির নায়ক!” “সবচেয়ে মজার ভাইরাল ভিডিও, ধন্যবাদ ভাই!”–এরকম প্রশংসা পড়ে তারা আরও উৎসাহিত হয়। বন্ধুরা বুঝতে পারে, যেকোনো অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত, এমনকি ছোট ছোট বিপত্তি, সেলফির মজা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বাজারের এই অদ্ভুত কাকের সঙ্গে তাদের লড়াই কেবল তাদের বন্ধুত্বকে আরও শক্ত করে না, বরং তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার দর্শকদের জন্যও আনন্দের এক নতুন অধ্যায় তৈরি করে। এই মুহূর্তগুলো তাদের আরও সাহসী এবং সৃজনশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে, এবং তারা নতুন নতুন পরিস্থিতিতে নিজেদের হাস্যকর ও মজার সেলফি তুলতে আরও উদ্দীপ্ত হয়।
৪
রাহুল, মিতু ও নিশা আগের ভাইরাল সেলফি ও ভিডিওর উত্তেজনা নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জের পরিকল্পনা করে। তারা ঠিক করে এবার শহরের ব্যস্ত রাস্তার ট্রাফিক লাইটের সামনে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কিন্তু মজার সেলফি তুলবে। তাদের ধারণা, ব্যস্ত রাস্তা, থেমে থাকা গাড়ি, মোটরবাইক আর চলমান মানুষের মধ্য দিয়ে তোলা ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও ভাইরাল হবে। রাহুল লাইটের পাশে দাঁড়ায়, মিতু পাশে ক্যামেরা ধরে প্রস্তুতি নেয়, আর নিশা মাঝখানে হেসে লাফ দিয়ে তাদের সঙ্গে পোজ দেয়। ট্রাফিক লাইটের লাল, হলুদ আর সবুজ আলোর ঝলক তাদের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে কাজ করছে। তারা পরিকল্পনা অনুযায়ী ধীরে ধীরে রাস্তার দিকে ঝুঁকে কিছু ভঙ্গি এবং হালকা ঝুঁকিপূর্ণ লাফ দেয়, যেন ছবিটিকে আরও রোমাঞ্চকর করা যায়। মানুষ, মোটরবাইক আর ছোট ছোট যানবাহনের ধাক্কা খেয়েও তারা তাদের মজা চালিয়ে যায়, হাস্যকর ভঙ্গি এবং অদ্ভুত অভিব্যক্তি ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা হচ্ছে।
কিন্তু হঠাৎ, রাহুলের উচ্ছ্বাস আর উত্তেজনার কারণে সে হঠাৎ দৌড়ে রাস্তা পার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এক মুহূর্তেই পুরো পরিস্থিতি চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে। একটি মোটরবাইক হঠাৎ থেমে যায়, চালক অবাক হয়ে রাহুলের দিকে তাকায়, আর পাশের পায়চারীরা স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। রাহুল দ্রুত পেছনের দিকে ফিরে বন্ধুরা তার পাশে আছে কিনা তা যাচাই করে, আর মিতু ও নিশা ততক্ষণে হাসি আর উত্তেজনা দিয়ে পুরো দৃশ্য ক্যামেরায় ধরে রাখে। রাস্তায় থেমে থাকা গাড়ি, অবাক মানুষ, থমকে থাকা মোটরবাইক—সবকিছু যেন ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে ড্রামাটিক এবং হাস্যকর মুহূর্ত তৈরি করে। তিনজন বন্ধু হেসে ফেটে পড়ে, কারণ তারা বুঝতে পারে এই ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তটি কেবল তাদের নিজের জন্য নয়, দর্শকদের জন্যও এক বিরল মজা তৈরি করেছে।
পরের দিন ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার পর, তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। দর্শকরা রাস্তায় বন্ধুর দৌড়, থেমে থাকা মোটরবাইক এবং আশেপাশের মানুষের অবাক হওয়া মুখ দেখে উচ্ছ্বাসিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “এরা কি সত্যিই এত সাহসী?” “সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ভাইরাল ভিডিও!”–এরকম প্রশংসা ভিডিওকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। রাহুল, মিতু ও নিশা বুঝতে পারে, প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ, অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত এবং কিছুটা ঝুঁকি নিলে সোশ্যাল মিডিয়ার মজা আরও বাড়ানো যায়। এই ট্রাফিক লাইটের ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্ত কেবল তাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে না, বরং তাদের সেলফি ক্রেজকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। তারা আরও সাহসী, আরও সৃজনশীল এবং নতুন নতুন পরিস্থিতিতে নিজেদের হাস্যকর ও মজার সেলফি তুলতে আরও উদ্দীপ্ত হয়, এবং এই ছোট ছোট রোমাঞ্চ তাদের প্রতিদিনের জীবনের উত্তেজনা এবং আনন্দের অংশ হয়ে ওঠে।
৫
রাহুল, মিতু ও নিশা শহরের ভিড় থেকে দূরে, প্রকৃতির মাঝে একটি নতুন সেলফি ট্রেন্ড শুরু করার পরিকল্পনা করে। তারা ঠিক করে এবার গ্রামের কাছে একটি ছোট ঝরনায় যাবে, যেখানে ঝরনার স্বচ্ছ পানি, চারপাশের সবুজ বন এবং পাথরের ছোট ছোট ছাপ স্বাভাবিকভাবে ছবি ও ভিডিওর জন্য এক দুর্দান্ত ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করবে। সকাল-বিকেলের হালকা রোদ আর পাখির কণ্ঠের মাঝে তারা পৌঁছায় ঝরনায়। রাহুল তার ক্যামেরা হাতে নিয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি নিয়ে প্রস্তুতি নেয়, মিতু পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ঝরনার দিকে তাকিয়ে সৃজনশীল ভঙ্গি দেখায়, আর নিশা মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাসি দিয়ে মুহূর্তটি ক্যামেরায় বন্দি করার চেষ্টা করে। তারা ঠিক করে এবার শুধু দাঁড়িয়ে ছবি তোলা নয়, বরং ঝরনার পাশের পাথরগুলোতে লাফ দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গি করা, হাত-পা ছড়িয়ে হাসি আর মজা করা, এবং ছোট ছোট ঝরনার জল ছিটিয়ে তাদের দৃশ্য আরও প্রাণবন্ত করা। মুহূর্তটি তাদের জন্য এক ধরনের রোমাঞ্চ এবং আনন্দের উৎস হয়ে ওঠে।
কিন্তু হঠাৎ, রাহুলের উচ্ছ্বাসের মাঝে একজন আচমকা পাথরের উপর লাফ দিয়ে ঝরনার পানিতে পড়ে যায়। প্রথমে বন্ধুরা আতঙ্কিত হয়, কিন্তু ততক্ষণে নিশা এবং মিতু তৎপরভাবে ক্যামেরা ধরে পুরো ঘটনাটি ভিডিওতে বন্দি করে। লাফ, পানি ছিটানো, হঠাৎ পানিতে পড়ার অদ্ভুত ভঙ্গি—সবকিছু মিলিয়ে ভিডিওটি একেবারে হাস্যকর এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। রাহুল পানির মধ্যে ওঠার চেষ্টা করছে, মিতু ও নিশা তাকে সাহায্য করছে, আর হাসি আর চিৎকারের ধ্বনি চারপাশের সবুজ পরিবেশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা তাদের জন্য এক নতুন উত্তেজনার সঞ্চার করে। তারা বুঝতে পারে, প্রকৃতির সঙ্গে খেলা এবং অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ভিডিও ও ছবি আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। ছোট ছোট দুর্ঘটনা, যেমন পাথরে লাফ দিয়ে পড়া, প্রকৃতিতে তাদের কৌতুকপূর্ণ মজা এবং বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে।
পরের দিন তারা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। দর্শকরা ঝরনার স্বচ্ছ জল, পাথরের উপরে লাফ, আচমকা পড়ার অদ্ভুত মুহূর্ত এবং বন্ধুরা একে অপরকে সাহায্য করার দৃশ্য দেখে আনন্দিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “সবচেয়ে প্রাকৃতিক ও মজার ভিডিও!” “বন্ধুদের হাসি দেখেই মন ভালো হয়ে গেল!”–এরকম প্রতিক্রিয়া ভিডিওকে আরও ভাইরাল করে। এই ভাইরাল সেলফি বন্ধুরা বুঝতে পারে, প্রতিদিন নতুন স্থান, প্রকৃতির অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত এবং সাহসী চেষ্টার মধ্য দিয়ে তারা আরও মজা এবং আনন্দ সৃষ্টি করতে পারে। ঝরনার সেই ছোট্ট হাস্যকর দুর্ঘটনা কেবল তাদের বন্ধুত্বকে দৃঢ় করে না, বরং তাদের সেলফি ট্রেন্ডকে আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং জনপ্রিয় করে তোলে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, যেকোনো ছোটখাটো ভুল বা দুর্ঘটনা হলেও তা হাস্যকরভাবে গ্রহণ করতে হবে এবং পরবর্তী সেলফি ট্রেন্ডে আরও সাহসী, মজার ও সৃজনশীল হতে হবে, যাতে তাদের দর্শকরা প্রতিদিন নতুন রোমাঞ্চ এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে।
৬
রাহুল, মিতু ও নিশা নতুন ট্রেন্ডের উত্তেজনা নিয়ে শহরের এক জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টে পৌঁছায়। তারা ঠিক করে এবার খাবারের সঙ্গে সেলফি তুলবে, যেখানে রঙিন থালা, সুস্বাদু খাবার এবং রেস্টুরেন্টের আলোকসজ্জা তাদের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে কাজ করবে। রাহুল ক্যামেরা হাতে নেয়, মিতু টেবিলের পাশ থেকে পোজ দেয়, আর নিশা হেসে বসে তাদের সঙ্গে মিশে ছবি তুলতে চেষ্টা করে। তারা ঠিক করে, শুধু খাবারের পাশে বসে ছবি নয়, বরং খাবারের সঙ্গে খেলাধুলা করে, হালকা হেসে খেলে এবং অদ্ভুত ভঙ্গিতে ছবি তোলা হবে। হালকা আলো, রেস্টুরেন্টের ব্যস্ততা এবং চারপাশের মানুষের মুখে হেসে খেলার প্রতিক্রিয়া—সবই তাদের ভিডিওকে প্রাণবন্ত করে তোলে। তারা থালার দিকে তাকিয়ে, কেক, পিৎজা, সালাদ সবকিছুর সঙ্গে নানা ভঙ্গি করে ছবি তুলতে থাকে, যেন প্রতিটি ছবি আরও হাস্যকর এবং মজার হয়ে ওঠে।
কিন্তু হঠাৎ এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। রাহুল কেকের দিকে হাত বাড়ায়, কিন্তু অসাবধানতায় কেকটি টেবিল থেকে পড়ে যায় এবং নিশার চেহারায় লেগে যায়। প্রথমে নিশা একটু চমকে যায়, আর মিতু ও রাহুল অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু এরপর তিনজনেই হেসে ফেটে পড়ে। কেকের ক্রিম এবং চকোলেটের লেগে থাকা অবস্থা, নিশার হতবাক অথচ হাস্যকর মুখ এবং রেস্টুরেন্টের চারপাশের মানুষদের অবাক মুখ—সবই ক্যামেরার ফ্রেমে ধরা পড়ে। নিশা ধীরে ধীরে কেক মোছার চেষ্টা করছে, আর বন্ধুরা হেসে সাহায্য করছে। এই অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা ভিডিওতে আরও প্রাণবন্ত এবং হাস্যকর মুহূর্ত তৈরি করে। বন্ধুরা বুঝতে পারে, কখনও কখনও ছোট্ট ভুলও সেলফির আনন্দ এবং দর্শকের মজা বাড়াতে পারে।
পরের দিন তারা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। দর্শকরা কেক পড়া, নিশার অবাক অথচ হাস্যকর চেহারা এবং বন্ধুরা হেসে খেলার দৃশ্য দেখে আনন্দিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “এই বন্ধুরা সত্যিই ভাইরাল হিরো!” “সবচেয়ে মজার ভিডিও, মন খুশি হয়ে গেল!”–এরকম প্রতিক্রিয়া ভিডিওকে আরও ভাইরাল করে। এই খাবারের সঙ্গে ছোট্ট বিপত্তি কেবল তাদের বন্ধুত্বকে দৃঢ় করে না, বরং তাদের সেলফি ট্রেন্ডকে আরও জনপ্রিয় করে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিদিন নতুন চ্যালেঞ্জ, অপ্রত্যাশিত ঘটনা এবং হাস্যকর মুহূর্তগুলো আরও সাহসী ও সৃজনশীলভাবে ক্যামেরায় বন্দি করতে হবে, যেন দর্শকরা প্রতিদিন নতুন রোমাঞ্চ এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে। রেস্টুরেন্টের এই ছোট্ট দুর্ঘটনা তাদের শেখায়, জীবনের ছোট্ট ভুলও হাস্যকরভাবে গ্রহণ করা যায়, এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ার আনন্দের অংশ হয়ে উঠতে পারে।
৭
রাহুল, মিতু ও নিশা নতুন ট্রেন্ডের উত্তেজনা নিয়ে শহরের এক সুসজ্জিত পার্কে পৌঁছায়। তারা ঠিক করে, এবার পশুর সঙ্গে সেলফি তুলবে—পোষ্য কুকুর, ছানা বিড়াল এবং পার্কের অন্যান্য ছোট প্রাণী তাদের ছবি ও ভিডিওর প্রধান আকর্ষণ হবে। পার্কের সবুজ ঘাস, ফুলের গন্ধ এবং খোলা আকাশের নীলিমা তাদের সেলফির জন্য প্রাকৃতিক ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করে। রাহুল কুকুরটির সঙ্গে খেলা শুরু করে, মিতু বিড়ালটির দিকে নজর রাখে, আর নিশা মাঝখানে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ধরে প্রস্তুতি নেয়। তারা ঠিক করে, শুধু বসে ছবি নয়, বরং পশুর সঙ্গে খেলাধুলা করে, হালকা লাফ দিয়ে পোজ নেবে এবং হাস্যকর মুহূর্তগুলো ক্যামেরায় বন্দি করবে। কুকুরটি তাদের সঙ্গে লাফ দেয়, বিড়ালটি ধীরে ধীরে তাদের চারপাশে ঘোরে, আর বন্ধুরা তার অদ্ভুত ভঙ্গি ও খেলাধুলাকে দেখে হেসে ফেটে পড়ে।
কিন্তু হঠাৎ এক অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত ঘটে। একটি ছোট বিড়াল আচমকা নিশার মাথায় লাফ দেয়। প্রথমে নিশা চমকে চিৎকার করে, আর রাহুল ও মিতু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু সেই অবাক হওয়া মুহূর্ত এবং নিশার চেহারার অদ্ভুত ভঙ্গি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। বিড়ালটি লাফের সঙ্গে সঙ্গে পেছনের দিকে চলে যায়, আর বন্ধুরা হেসে ফেটে পড়ে। কুকুরটিও তাদের খেলায় মিশে আরও মজার ভঙ্গি করে। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা ভিডিওকে আরও প্রাণবন্ত, হাস্যকর এবং দর্শকের জন্য মজার করে তোলে। বন্ধুরা বুঝতে পারে, কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত মুহূর্তই তাদের সেলফি এবং ভিডিওকে সবচেয়ে জনপ্রিয় করে তুলতে পারে। তারা আরও সাবধানে ক্যামেরা ধরে রাখে, কিন্তু হাস্যকর মুহূর্তগুলোকে কোনোভাবেই মিস করতে চায় না।
পরের দিন তারা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। দর্শকরা বিড়ালের হঠাৎ লাফ, নিশার অবাক অথচ হাস্যকর মুখ এবং বন্ধুরা হেসে খেলার দৃশ্য দেখে উচ্ছ্বাসিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “সবচেয়ে মজার ভিডিও! এই বিড়ালটাই মূল হিরো!” “বন্ধুরা ও পশুরা একসাথে কত মজার!”–এরকম প্রতিক্রিয়া ভিডিওকে আরও ভাইরাল করে। পার্কের এই ছোট্ট ঘটনার মাধ্যমে তারা বুঝতে পারে, প্রকৃতির সঙ্গে খেলা, অপ্রত্যাশিত ঘটনা এবং বন্ধুত্বের হাসি একসঙ্গে থাকলে ভিডিও আরও আকর্ষণীয় হয়। এই মুহূর্ত কেবল তাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে না, বরং তাদের সেলফি ক্রেজকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিদিন নতুন পরিস্থিতি, প্রাণী এবং অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের মধ্যে আরও সাহসী, মজার এবং সৃজনশীলভাবে ছবি ও ভিডিও তুলবে, যাতে দর্শকরা প্রতিদিন নতুন রোমাঞ্চ এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে।
৮
রাহুল, মিতু ও নিশা শহরের ব্যস্ত রাস্তায় নতুন ট্রেন্ডের সেলফি তোলার পরিকল্পনা নিয়ে বের হয়। আজকের লক্ষ্য: স্ট্রিট পারফর্মার এবং রাস্তায় চলমান মানুষের সঙ্গে মজা এবং অদ্ভুত ভঙ্গিতে ছবি তোলা। রাস্তায় বিভিন্ন পারফর্মার—মিউজিশিয়ান, নাচু, নাট্যশিল্পী—এবং রঙিন আলোকসজ্জা তাদের ছবির জন্য প্রাকৃতিক এবং প্রাণবন্ত ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করে। রাহুল পারফর্মারের দিকে এগিয়ে যায়, মিতু পাশে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ধরে রাখে এবং নিশা মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাসি দিয়ে প্রস্তুতি নেয়। তারা ঠিক করে শুধু পোজ নয়, বরং পারফর্মারের সঙ্গে খেলাধুলা, ভঙ্গিমা এবং নাটকীয় ভঙ্গি দেখাবে, যেন তাদের ছবি আরও জীবন্ত এবং মজার হয়। রাস্তায় হট্টগোল, মানুষের চমক, পারফর্মারের দক্ষতা—সবই ভিডিওতে একত্রিত হয়ে ছবিকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। বন্ধুরা পারফর্মারের ভঙ্গি অনুসরণ করতে করতে অদ্ভুত ভঙ্গিতে পোজ নিতে থাকে, আর দর্শকের জন্য এক হাস্যকর দৃশ্য তৈরি হয়।
হঠাৎ পারফর্মার একটি নাটকীয় কায়দা দেখায়, যা বন্ধুরা আগে কখনো দেখে না। রাহুল, মিতু ও নিশা এই মুহূর্তে ‘মুক্ত হাতি’ চরিত্রে পোজ দেয়। রাহুল তার হাত বড় করে উপরের দিকে তুলে দেয়, মিতু পেছনের দিকে হালকা ঝুঁকে যায় এবং নিশা হাত-পা ছড়িয়ে নাটকীয় ভঙ্গি করে। পারফর্মারের সঙ্গে তাদের মেলানো ভঙ্গি এবং হাস্যকর অভিব্যক্তি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পথচারীরা অবাক হয়ে থমকে দাঁড়ায়, কিছু মানুষ হেসে খাওয়া শুরু করে। এই নাটকীয় মুহূর্ত ভিডিওতে এমনভাবে বন্দি হয় যে দর্শকরা মুগ্ধ এবং হেসে খেতে বাধ্য হয়। বন্ধুরা প্রথমে কিছুটা লজ্জায় থাকে, কিন্তু এরপর নিজেদের হাসি সামলাতে পারে না। তারা বুঝতে পারে, কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত এবং নাটকীয় মুহূর্তই সেলফিকে সবচেয়ে মজার করে তোলে।
পরের দিন তারা ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে। দর্শকরা পারফর্মারের দক্ষতা, বন্ধুরা ‘মুক্ত হাতি’ চরিত্রে নাটকীয়ভাবে পোজ নেওয়া এবং আশেপাশের মানুষের মজা দেখে আনন্দিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “এটি সত্যিই ভাইরাল হিরো ভিডিও!” “সবচেয়ে হাস্যকর এবং সৃজনশীল!”–এরকম প্রতিক্রিয়া ভিডিওকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। বন্ধুরা লক্ষ্য করে, তাদের ফলোয়ার সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, এবং মানুষ তাদের হাস্যকর ভঙ্গি এবং সাহসী পোজের ভিডিও দেখার জন্য অপেক্ষা করছে। এই স্ট্রিট পারফর্মারের সঙ্গে সেলফি তাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে না, বরং তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিদিন নতুন নতুন লোক, পরিস্থিতি এবং অপ্রত্যাশিত মুহূর্তের মধ্যে আরও সাহসী ও সৃজনশীলভাবে সেলফি তুলবে, যেন দর্শকরা প্রতিদিন নতুন রোমাঞ্চ এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে, এবং তাদের ক্রেজের গল্প আরও বড় হয়ে ওঠে।
৯
রাহুল, মিতু ও নিশা নতুন ট্রেন্ডের উত্তেজনা নিয়ে মেলার মাঠে পৌঁছায়। আজকের লক্ষ্য: ঝুঁকিপূর্ণ রাইডের ওপর সেলফি তোলা। রঙিন বাতি, উড়ন্ত রাইডের আওয়াজ, মানুষের চিৎকার আর আনন্দ—সবকিছু তাদের ভিডিও ও ছবির জন্য প্রাকৃতিক ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করে। তারা ঠিক করে, শুধু বসে ছবি নয়, বরং ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে পোজ দেয়া হবে, যাতে ছবিটি আরও রোমাঞ্চকর এবং দর্শকের জন্য আকর্ষণীয় হয়। রাহুল রাইডের উপরে সাবধানে পোজ নেয়, মিতু পাশে দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ধরে রাখে, আর নিশা মাঝখানে দাঁড়িয়ে হাসি দিয়ে তাদের সঙ্গে মিশে প্রস্তুতি নেয়। রাইডের দুলতে থাকা ঢেউ, বাতাসের ঝাঁকুনি, এবং বন্ধুরা তাদের পোজে ভারসাম্য ধরে রাখার চেষ্টা—সবই ভিডিওতে জীবন্ত এবং মজার দৃশ্য হিসেবে ধরা পড়ে। তারা লাফ দেয়, হাত উপরে তুলে নেয়, এমনকি কখনও ঝুঁকি নিয়ে ভঙ্গি করে, যেন প্রতিটি ছবি দর্শকের চোখে রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে।
হঠাৎ রাহুল তার চপলতা দেখায়। সে হঠাৎ এক আঙুলের ইঙ্গিত বা অদ্ভুত ভঙ্গি দেখায়, যা বন্ধুরা আগে কখনো দেখেনি। এই আচরণ বন্ধুরা অবাক হয়ে দেখে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তারা হাসতে শুরু করে। মিতু এবং নিশা তার আচরণ ভিডিওতে ধরে রাখে। রাইডের দুলন্ত গতি, বন্ধুরা ভারসাম্য ধরে রাখার চেষ্টার সঙ্গে রাহুলের চপলতা—সবকিছু মিলে ভিডিওটি হাস্যকর এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। দর্শকেরা ভিডিওতে শুধু রোমাঞ্চ দেখছে না, বরং বন্ধুরা কীভাবে অপ্রত্যাশিত মুহূর্তকে হাস্যকরভাবে গ্রহণ করছে তাও দেখতে পাচ্ছে। বন্ধুরা নিজেদেরও সামলাতে পারে না; তারা একে অপরকে টানে, হাসি আটকে রাখতে চেষ্টা করে, কিন্তু অবশেষে সবাই হেসে ফেটে পড়ে। এই মুহূর্ত তাদের জন্য একটি নতুন রোমাঞ্চের অনুভূতি এবং ভিডিওর মজার কারণে আরও আনন্দদায়ক হয়ে ওঠে।
পরের দিন ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হলে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। দর্শকরা রাইডের ঝাঁকুনি, বন্ধুরা ভারসাম্য ধরে রাখার চেষ্টা এবং রাহুলের হঠাৎ চপলতা দেখে আনন্দিত হয়। কমেন্টে লেখা থাকে, “সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এবং মজার ভাইরাল ভিডিও!” “বন্ধুরা সত্যিই অসাধারণ!”–এরকম প্রতিক্রিয়া ভিডিওকে আরও জনপ্রিয় করে। বন্ধুরা বুঝতে পারে, প্রতিদিন নতুন রাইড, ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্ত এবং অপ্রত্যাশিত চপলতা ভিডিও এবং সেলফি আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। এই ঝুঁকিপূর্ণ রাইডের সেলফি কেবল তাদের বন্ধুত্বকে দৃঢ় করে না, বরং তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার উপস্থিতিকে আরও শক্তিশালী করে। তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিদিন নতুন পরিস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্ত এবং সাহসী চ্যালেঞ্জের মধ্যে আরও সৃজনশীল ও মজারভাবে ছবি তুলবে, যেন দর্শকরা প্রতিদিন নতুন রোমাঞ্চ এবং আনন্দ অনুভব করতে পারে, এবং তাদের ক্রেজের গল্প আরও বড় হয়ে ওঠে।
১০
রাহুল, মিতু ও নিশা তাদের সেলফি ক্রেজের শেষ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিভিন্ন লিফট, ঝরনা, রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, বাজার, পার্ক, মেলা এবং রেস্তোরাঁতে যে সব হাস্যকর এবং রোমাঞ্চকর মুহূর্ত তারা ক্যামেরায় বন্দি করেছে, তার মধ্য দিয়ে তারা নিজেই উপলব্ধি করতে শুরু করে যে সব জায়গায় সেলফি নেওয়া মজা হলেও সবসময় ঝুঁকি থাকে। লিফটের ভিতরে আটকে যাওয়া, ট্রাফিক লাইটে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়া, ঝরনায় পাথরে পড়ে যাওয়া এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাইড—সবই প্রথমে তাদের জন্য উত্তেজনার উৎস ছিল, কিন্তু এখন তারা বুঝতে পারে যে, এসব মুহূর্ত কখনো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। হাস্যকর ঘটনাগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে যতটা আনন্দদায়ক হয়েছে, বাস্তবে তা বিপদের সঙ্কেতও বহন করেছে। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে, কীভাবে নিরাপদভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে সেলফি তোলা যায়। বন্ধুরা বুঝতে পারে, মজা করার মানে ঝুঁকি নেওয়া নয়; বরং সৃজনশীলতা, বন্ধুত্ব এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী মজা করা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধুরা সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা এখন থেকে এমন স্থান ও পরিস্থিতি বেছে নেবে যেখানে তারা নিরাপদ থাকবে, কিন্তু একই সঙ্গে ভিডিও এবং ছবি এখনও মজার এবং প্রাণবন্ত হবে। তারা ঝরনার পাথরের উপর বা রাইডের চূড়ান্ত দিকের মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ছবি তোলার পরিবর্তে, ঝরনার নিরাপদ ধারে, পার্কের খোলা ঘাসে, রেস্তোরাঁর টেবিলে বা ট্রাফিকের নিরাপদ সাইডওয়াকে সৃজনশীল ভঙ্গি নিয়ে ছবি তুলবে। বন্ধুরা নিজেদের হাস্যকর এবং অদ্ভুত মুহূর্তগুলো আবারও ধরা রাখবে, কিন্তু এবার নিজেদের এবং অন্যদের নিরাপত্তা বজায় রেখে। তারা বুঝতে পারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মজা এবং ভাইরাল হওয়া খুবই আনন্দদায়ক, কিন্তু নিজের নিরাপত্তা এবং সতর্কতা সবসময় প্রথমে রাখতে হবে। এই উপলব্ধি তাদের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করে এবং তাদের সৃজনশীলতার নতুন দিক উন্মোচিত করে।
শেষে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, প্রতিদিন নতুন ছবি এবং ভিডিও তুলবে, তবে নিরাপদ স্থানে। তারা মজা এবং হাসি ভাগ করবে বন্ধু এবং ফলোয়ারদের সঙ্গে, যেন দর্শকরা প্রতিদিন তাদের ভিডিও থেকে আনন্দ পায়, কিন্তু তারা নিজেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় না থাকে। লিফট, ঝরনা, বাজার, রেস্তোরাঁ, পার্ক, মেলা—সব জায়গায় তাদের অদ্ভুত এবং হাস্যকর অভিজ্ঞতা তাদের স্মৃতিতে সঞ্চিত থাকে, আর তারা শিখেছে কীভাবে নিরাপদে সেলফি ক্রেজ উপভোগ করা যায়। বন্ধুরা একে অপরের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়, এই শিক্ষা তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার আনন্দের সঙ্গে মিশিয়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা করবে। তারা বুঝতে পারে, হাসি এবং মজা ভাগাভাগি করা সেলফির আসল উদ্দেশ্য, আর নিরাপদ থাকা সেই আনন্দকে আরও দীর্ঘস্থায়ী এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে। এই শেখার মুহূর্ত বন্ধুত্ব, মজা এবং সচেতনতার মধ্যে সমন্বয় ঘটায়, এবং তাদের সেলফি যাত্রার একটি সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ সমাপ্তি উপহার দেয়।
~~~